অনুপম মুখোপাধ্যায় ।। পুনরাধুনিক কবিতা ।। বাক্‌ ১১১




ধাবা

খাটিয়ার। তলায় যে পা
নিজের বলে মন মানছে না
ট্রাক থেকে সকালধোয়া
গন্ধ
বাসি রাম। এই এলাকায়
ছাগল চরা বন্ধ
চায়ের উপর সর পড়েছে সরে কালো দাগ
ভৈরোঁ সিং-এরপৈশাচিক
হাঁক রাগ
একদা। এই ধাবার জমি
শ্মশানভূমি ছিল
কাল রাতে কি করোটিতে
লিকার ঢেলেছিল
এমন সকালখারাপ যাবে। দিন
১ চড়ে ঘাড় ঘুরে যাবে
ডিমে পেঁয়াজ
ক্ষীণ




রান্নাঘর আর রামধনুর ব্যাপার

রঙিন রান্নাঘর থেকে। বেরিয়ে আসছে
সবাই সীতা
আকাশের মেঘ বুঝতে চাইছে
আকাশ থেকে। ঝুলে থাকছে
বৃষ্টির অজস্র সুতো
রং। সরিয়ে নিচ্ছি
রান্নাঘরের ইঞ্জিন তো
বদলে যাচ্ছে না
উনান। কিংবা উইঢিবি
ঠাণ্ডা ব্যাপার নয়
লক্ষ্মণদের মিছিল ছিঁড়ে। সহজ
১ রাম১ তিরে
মেঘ সরিয়ে দিচ্ছে
সুতো উড়িয়ে দিচ্ছে
গাছকে রাবণ করছে
নিখুঁত ঝাপসা রামধনু






কুশন নরম হচ্ছে

কুশন। যত নরম হচ্ছে
বালিশ মনে হচ্ছে
যথা। হাত বাড়ালে স্যুইচ
যেনহাত কমালে
শান্তি
স্বপ্নে যার গিটার হল
কী-বোর্ড কার হল
গায়িকার কী যে হল
গায়ক জানছে কি
জীবন। দাস দাশ প্রভু
ভেজা সেক্সি হাত। কেটে দিচ্ছ
ক্লান্তির তারে




                                                                   (চিত্রঋণ : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

10 comments:

  1. এইসময়ের থেকে কিছুটা এগিয়ে তোমার কবিতা। শেষ কয়েকটি লাইন । তার দৃষ্টান্ত।

    ReplyDelete
  2. রান্নাঘর, দারুণ লেগেছে....কারন ওতে যে কল্পচিত্র গুলোর অবস্থান যে প্রকৃতিতে রাখা হয়েছে তাদের নিয়তির সম্ভাবনা আমাকে রোমাঞ্চকর করেছে। কিন্তু নিজেকে 'ধাবা 'র কাছে নিয়ে যেতে পারিনি

    ReplyDelete
  3. প্রখর উপলব্ধির ভেতর এক সচকিত গিটার, কী-বোর্ডের প্রশ্নটি ঘুরপাক খায়। গায়িকার নম্র শিহরন তবু ভুলতে পারি না। কবিতা শিকড়স্থিত করে আদি প্রজ্ঞার প্রজ্ঞাপনে।

    ReplyDelete
  4. 'ধাবা' লঘু কথাবার্তাকে প্রকট করে দেবার জাদু... অন্তমিল কিন্তু একদম প্রচল থেকে বেরিয়ে... বড় আনন্দ পেলাম। ছিপছিপে শরীরের তিনটি কবিতা উপস্থাপনে... কল্পনা-বিন্যাসে পাঠকপ্রিয় হয়ে উঠলো।

    ReplyDelete
  5. মজার সিরিয়াসনেস আনন্দ শেখায়। মেধা মেরে দ্যায় গোমড়ামুখোর পশ্চাদ্দেশ।

    ReplyDelete
  6. খুব সুন্দর, যেমন অনুপম লিখে থাকেন আর কি ! অনুপমীয়।

    ReplyDelete
  7. আকাশ থেকে। ঝুলে থাকছে
    বৃষ্টির অজস্র সুতো...চমৎকার, আর অন্যগুলোরও থাকছে নিজস্বতা।

    ReplyDelete
  8. 'ধাবা' কবিতায় এক ধাবার বর্ণনা রয়েছে যার মালিক এক শিখ। তার পানীয়ের সরে সে ঘৃণার কালো দাগ ফেলেছে। ফেলে আসা বাসি রমের সঙ্গে মিশ্রিত করোটিতে লিকারের ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে খাটিয়ার কাছে, যেহেতু স্থানটি পূর্বে শ্মশান ছিলো। ডিমের মধ্যে পেঁয়াজের বদবু, এই সব অগুন্তি অনুষঙ্গ আছে কবিতাটিতে। যেহেতু আমার ব্যক্তিগত ভাবে ধাবার অভিজ্ঞতা আছে, সেহেতু, বুঝি যে এই বিবরণ কতোটা সঠিক। ধাবারা চাপা পড়ছে প্রোমোটারদের হাতে। ধাবার নীচে শ্মশান বলতে আমি এটাই বুঝি। 'রান্নাঘর আর রামধনুর ব্যাপার' কবিতাটিতে আগুনকেও রঙ হিসেবে দেখছেন কবি। রান্নাঘরের ইঞ্জিন ও উনোন সরিয়ে নিলেও রান্নাঘর বা উনোন তো রঙ পাল্টাচ্ছে না। এভাবেই চলছে রঙ ও তার বিন্যাস। "রাতকে রাবণ করছে / ঝাপসা রামধনু"। অসামান্য দুটি পংক্তি। 'কুশন নরম হচ্ছে' কবিতাটি ভীষণই লিরিকাল। পুনরাধুনিক হয়েও। সঙ্গীতের সঙ্গে এর খুবই নিকট সম্পর্ক। গিটার, কী-বোর্ড, গায়ক-গায়িকা নিয়ে এই কবিতাটি। এর মধ্যেই শান্তি খুঁজছেন কবি। সব মিলিয়ে ৩টি কবিতাই আমার কাছের, কিন্তু ৩ ভাবে। এবং, এই কবিতাগুলো লিখতে পারেন একমেবাদ্বিতীয়ম অনুপম মুখোপাধ্যায়। 'পুনরাধুনিকতা' জিন্দাবাদ !

    ReplyDelete
  9. সময় করে আজ পড়া হল , ভাঙাগরা ভাবে কিছুটা বোঝা গেল , বেশ মন কেরেছে লেখায়

    ReplyDelete
  10. ভালো লাগেনি, হয়তো ঠিকভাবে বুঝতে পারিনি তাই,

    ReplyDelete